ভরাটে শব্দের তলপেট
আমি কোনকালেই বইয়ের পাতা
ভাঁজ করে রাখি না।
যখনই খুলি ঠিক সেখানেই খুলি
যে পাতায় রেখে গেছি তাকে।
অন্ধকারেও জানি কোথায় তালার নাভী
কোথায় দরজার ছিটকিনি।
চাবিরছড়া থেকে ঠিক ঠিক বের
করতে পারি গোল নাভী
তালার চাবি কোনটি?
ঠিক জায়গায় চোখ রাখি
যেখানে আটকে রেখে গেছি চোখ।
চোখ খুব সন্তর্পণে জেগে তুলে
আমার ঘুমন্ত চোখ।
বইয়ের কান মলে দিতে আমার ইচ্ছে করে না।
কান মলার কান গরম করা লাল লজ্জ্বা
এখনও আমার পিছু ছাড়েনি।
বাঁধানো ফ্রেমের মতো ঝুলে
আছে স্মৃতি ও দেয়ালে।
হাতের আঙুল নেড়ে নেড়ে বুঝি
এই সেই অক্ষর শরীর;
এই সেই সগ্রাণতা---
ঠিক জায়গায় রেখেছি আমার আঙুল।
এই কেঁপে ওঠা ঝঙ্কৃত রক্তমাংস শরীর
ভারী গরম নিশ্বাসে
দুলে উঠছে
ফুলে উঠছে
ভরাটে শব্দের তলপেট।
ভয়
অন্ধকারে একবার মোম আর ম্যাচ
নিয়ে সারারাত বসে ছিলাম।
হাতে ছিল দেশলাইকাঠি।
মোমও ফ্লোরে এ্যাটেনশান।
অকম্পিত দেহে মন ছিল বিক্ষিপ্ত।
খস করে বারুদ ঘষার সাহস হলো না।
দপ করে জ্বলা আগুনে ভয়
ফুলকিতে ভয়
ভয়ে ভয়ে মন জুবুথুবু।
অকম্পিত দেহে মন ছিল বিক্ষিপ্ত।
খস করে বারুদ ঘষার সাহস হলো না।
অন্ধকার ঘর আগ্রাসী
রাজনীতিবিদ।
চুলের কাঁটা
কালো ক্লীপে আটকে রেখেছো
অবাধ্য চুল?
তোমার না রূপার কাঁটা ছিল?
কাঁটার মাথায় তিন তিনটি
ছোট ছোট বল হেলেদুলে পড়তো
একবার এপাশে
আরেকবার অন্যপাশে?
এপাশ ওপাশের মাঝের ঝুলন্ত শূন্যতাই
অনন্ত গভীর খাড়ি
চিহ্নহীন পথ।
কোন কোন বল চুলের জটায়
যখন আটকে যেতো
আমার তখন দমবন্ধ হবার জোগাড়।
ঝুল ঝুল আমার জীবন জীবন্ত জীবন।
চড়ায় আটকে যাওয়া নৌকা কবে
পাড়ি দিয়েছে পথ?
সিক্সপ্যাক
ফ্রেমবন্দি মূহুর্তের ছবি ঝুলে আছে
দেয়ালে দেয়ালে।
তোমার অংশ নিয়ে নিয়ে দেয়াল কত
সুন্দর!
দেয়াল ধরে রেখেছে চিরকালীন করে
তোমার কত কত মূহুর্ত
তোমার বিভাব।
দেয়াল যেন রাজসিক পুরুষ।
যেন নয়--ঠিক ঠিক সুঠাম বলিষ্ঠ পুরুষ
সিক্সপ্যাক থেকে ঝরছে পৌরুষ।
কয়েন
ভিড়ের ভেতর হঠাৎ
বাতাসে দুলে ওঠা তাঁবুর সাথে
দেখে ফেলেছি
হলুদে মাখামাখি তোমার মুখ ও শাড়ির
আঁচলের সলজ্জ চঞ্চলতা।
মুখ ও আঁচল মূলত কয়েন
গড়গড় করে গড়িয়ে পড়ে---
একটি দেখলে অন্যটি দেখার সাধ জাগে।
ছাপ্পামারা দুই পিঠ একসাথে
সবাই দেখতে পারে না।
কেউ কেউ পারে।
ভোজ
একবার রিঙ ছুঁড়ে সাবান পেয়েছিলাম।
কসকো সাবান।
দুই টাকার বাজিতে
পীত রঙের কসকো সাবান।
মোড়কে মাথায় টাওয়েল জড়িয়ে
সাবান ফেনা বাথটবে ডুবে আছে মেয়েটি।
মোড়ক খুলবার আগেই
আমি টাওয়েল ধরে টান দিয়েছিলাম।
আর তখনই বিপত্তিটা ঘটল।
ঘাঢ় বাঁকিয়ে বাথটব থেকে তেড়েফুঁড়ে
আসবার সাথে সাথে বুঝেছিলাম
মোড়কের মেয়েটির শুধু বড় খোঁপা নয়
কথার চোপাও আছে।
মেটে রঙের মুখশ্রী
কতকিছু যে ফেলে দিয়েছি
এক বাসাবাড়ি থেকে আরেক বাসায়
থিতু হতে হতে--তার আর ইয়াত্তা নেই।
ফেলে দিতে হয় এককালের প্রিয়তা
অন্যকালের নির্ভার ডানার জন্য।
এই যেমন মুঠোভরা রঙিন মার্বেল
অথবা আয় রে আমার গোলাপফুল।
ফেলে ফেলেই বাড়ন্ত পথ হয়।
পথের বাঁক হয়।
কথার ভাঁজে একান্ত বীজমন্ত্র হয়।
টানাটানা চোখের গোলগাল বাটার মতো
মেটে রঙের মুখশ্রী
আমি কোথাও ফেলতে পারিনি।
কুমোর পাড়ার একথাল কাঁদামাটির
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুতুলের
সারিতে দেখেছিলাম তাকে
কড়া সোঁদাগন্ধ নাকে মেখে
বিষ্ময়ভরা চোখে।
মেজবান
একবার এক মিশ্র বনে গিয়েছিলাম।
এটা সেটা কত কী
সাথে ছিল আমাদের!
বোতল ছিল
গ্লাস ছিল
ছিল কুচি কুচি সাদা সাদা বরফ
আর রুচি ঝালচানাচুর
ইচ্ছে করেই তবু তাঁবু নেইনি।
যেখানে রাত সেখানে কাতের
মতো করে মেহগনির
গোঁড়ায় শুয়েছিলাম সারারাত।
মেহগনি তাঁর পাশের মেহগনিকে
ডেকে এনে খুব নিকটে
হাত ছোঁয়া উঁচুতে পাতার ছাউনি
বানিয়ে দাঁড়িয়েছিল সারারাত।
প্রতিবেশি
একজন পাতা লকলক করে
নড়ছে আর নড়ছে
আর ভকভক করতে করতে
উগড়ে দিচ্ছে দু'হাতে
সবুজ আর হলুদ বমি।
ওয়াক থু
ওয়াক থু...
লিকলিকে পাতলা শরীরে
খামছির দাগ
চিমটির কুচানো আঁচড়
আর সারা গায়ে বিবর্ণ শ্যাওলা।
আমার নিকট প্রতিবেশি
জানলার পাশে
দেয়ালের পাশে
মাঝখানে নয় ইঞ্চি করিডোর।
হাত বাড়ালেই
হাতের পাতায়
একজন পাতা রাখে মাথা
নীরবে নিভৃতে
ভয় আর বিস্ময়ের চোখে।
সর্বজয়া
ঝুমকো জবার মতো ঝুল ঝুল স্বভাব তোমার নয়।
তুমি পাল্টা প্রশ্নকর্ত্রী।
একই সরল রেখায় আঁকা টানটান শরীর তোমার।
দেহের ভাঁজপত্র খুলে খুলে যে কলাবতী
বিজ্ঞাপিত হয় সে যে তুমি নও তা আমি জানি।
লজ্জাশীলা ঘোমটাটানা কলাবৌ
ভেসে গেছে কাল কার্তিকের বেনোজলে
বিসর্জনের উছিলায়।
দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের মতো আমিও
দেখেছি জলে মিশে যাচ্ছে বিউটিপার্লারের
আই লাইনার
মাসকারা
ফেসিয়ার
গোলাপি আভার লিপস্টিক
আর চকচকে ইমিটেশেনের গয়না।
মরিচ জবার মতো গুটানো লালে লালশরীর তোমার
একই সরল রেখায় আঁকা টান টান শিরদাঁড়া।
ঘৃণা
রঙিন কাঁচ দেখলেই ঢিল খুঁজি।
একটি দুটি নয়
বেশ কয়েকটি।
হাত নিশপিশ করে।
এগুতে পারি না।
আহা! কী সুন্দর জানলার ফ্রেমে
আটকে আছে রঙিন কাঁচ
বুকের সিনা টান করে।
আশপাশে চোখ তখন খুঁজে
আধ ভাঙা ইটের টুকরা কিংবা
পড়ে পাওয়া চুলের কাঁকড়া
অথবা আমের আঁটি।
টাস করে ঝুরঝুর করে ঝরে পড়ার
শব্দের লোভে আমি
হাতে তুলে ছুঁড়ে দেই ঢিল
কখনো একটি
কখন পর পর কয়েকটি...
আর যে কোন ঢিল ছোঁড়ার আগেই
যে ঘৃণা ছুঁড়ে দিতে হয়
সেটি আমি ভালো করেই রপ্ত করেছি।
ভাতসাদা ফর্সা হাতের আলতা রঙ
ভিড়ের ভেতর যাকে পাই তার-ই হাত
খপাৎ করে ধরে ফেলি;
চমকে চেনা পথিক
সহাস্যে বাড়িয়ে দেয় হাত।
হাতের ভেতর হাত মিশে যখন আমি বুঝি
এই হাত বড্ড চেনাহাত
যেন খোলাকাগজ প্রতিদিনের পত্রিকা;
সকালের গায়ে রোদ ছুঁতে না ছুঁতে
ঘাড়কাৎ করে পড়ে থাকে আধেক খাটজুড়ে
আর আধেক ফ্লোরে।
আর যে বড্ড অচেনা পথিক
তার হাত ধরলেই চমকে চমকে ওঠি
যেন কোন কম্পমান পাতা।
হাতের ভেতরে হাত নিতে না নিতেই
কম্পিত পাতা নিমিষে এক ঝটকায় সরিয়ে নেয়
নামগন্ধহীন ছড়ানো সৌরভ।
আর তখনই টুপ করে খসে পড়ে আমার হাত
আড়বাঁশে মেলানো শুকনো কাপড়ের মতো।
যেন হল্লার ভেতর সবুজ রঙের পাতা
চুঁয়ে চুঁয়ে টুপটাপ ভিড়ের ভেতর
ভিভের ভেতর টুপটাপ চুঁয়ে পড়ে
চুঁয়ে পড়ে
চুঁয়ে পড়ে
চুঁয়ে পড়ে
ভাতসাদা ফর্সা হাতের আলতা রঙ।
পিকচার গ্যালারী
সেদিন মুঠোভরে তুলে এনেছি কতিপয় হল্লা
মানুষের ভীড়ের ভেতর থেকে।
সারি সারি কাঠের দেরাজ খুললেই
ছোট বড় ছায়া আর স্পর্শ
আর গন্ধের পিকচার
দেয়ালের হুকে ঝুলে ঝুলে
ধা ধিন ধা না তিন তা বোলের তালে নাচে।
এই পিকচার গ্যালারি আমার একান্ত
গ্যালারী।
সকলের যেমন গোপন কুঠরি থাকে
তেমনই একটা গ্যালারী।
আমিই শিল্পী।
আমিই ভিজিটর।
যে কোন হল্লার সামনে দাঁড়ালেই
বুঝতে পারি এই যে স্পর্শটি
মুখ চেপে হাসছে তাকে আমি চিনি।
তাঁর শরীরে নয়া আবাদের ফলার দাগ।
শরীরের ভেতর আস্তে আস্তে
মুখ তুলছে চোখ মেলছে
একটি কুৃড়ি দু'টি পাতা।
কলার হলুদ পাতার মতো তার গায়ের রঙ।
আর ফুলে ওঠা কলার মোচার ম ম গন্ধে
বিভোর আমার পরিসর।
তবে মৌয়ের সঙ্গীত শুনতে চাইলে
আমাকে বেহুদা ভোক্তা নয়
হতে হবে ধ্যানী একলব্য।
সেই ধরনের ডিভাইস না থাকার কারণে
আমি কেবলই ভিজিটর।
একই ফ্রেমের ভেতর আরেকটি হল্লা
্টানটান মেলে দেখেছি
সেখানে যে স্তন উপচিয়ে পাতলা দুধ
গড়িয়ে পড়ছে
সে স্তন কৌনিক নয়
বরং ঝুলে পড়া মাংসপিণ্ড
শুকিয়ে নেতিয়ে গেছে।
খয়েরি রঙের বোঁটা থেকে চুঁয়ে পড়া দুধের
স্বাদ কেমন তার সাধ ও স্বাদ আর
বিস্ফারিত চোখের ভাষা কেমন
তা বুঝতে চেয়েও আমি বুঝতে পারিনি।
তবে একথা ঠিক কান্নার নোনা স্বাদ
গাল বেয়ে যখন জিবে এসেছে
তার কাতরতা আমি বুঝেছি।
বুঝেছি সকল কাতরতা একই সুরে বাঁধা।
উঠান
কারো কারো উঠান ঘরের চেয়ে অধিক
ঘরময়।
আহ্বানের প্রসারিত হাতের
মদ ও মাদকতা
সযত্নে ফিরিয়ে দিয়ে থিতু হয়ে থাকি উঠানে।
ঘরের চেয়ে উঠান অধিক ঘরময়
আমার গতিকে স্তব্ধ করে
পরিত্যক্ত ভিটার মতো।
আহা!
কী সুন্দর কেয়ারি করা উল্লসিত উঠান।
আমার পা
এক পা উঠিয়ে অন্য কোথাও রাখবার আগেই
আমার আরেক পা রেখে গেলাম
তোমার কাছে।
যত্ন আত্তিতে নয়
রেখো যতি চিহ্ন হিসাবে।
গড়গড়িয়ে পড়বার সময় একটু থেমো
চিহ্নের কাছে
ভাব ও ভাবনার কাছে
আমার প্রকাশিত অপ্রকাশিত বাক্যের কাছে।
সবার কাছে পা গচ্ছিত রাখা যায় না
কেউ করে সর্বহারা
কেউ আবার সোহাগে বাড়ায়
ফিন্যাস ক্যাপিটাল।
তুমি আমার বোধিবৃক্ষ গৌতম মুনির আশ্রম।
পাতা রঙে আঁকা গিন্নী
পাতা রঙে আঁকা গিন্নী
পাতার রঙ কালচে সবুজ পাতার রঙ হলদে সবুজ।
পাতার রঙ ধুলা রঙে ধোঁয়াটে ফ্যাকাশ।
বৃষ্টির জলে লেপাপোছা স্নাত পাতা কেঁপে কেঁপে
বাতাসে কখনো নীল কখনো খয়েরি
কখনো ভেজাচুলের খোঁপায় লাল রঙের গামছা।
বড়গলা ব্লাউজ চুঁয়ে চুঁয়ে জল নামে
দেহ ছুঁয়ে ছুঁয়ে জলের আরামে।
রক্ত মাংসের কোমরে থলথলে মেদ
বৃত্তের চাপের মতো
চিকন মোটা ফর্সা মেদের পর মেদের ভাঁজ।
মাংসল পাছার সাথে যখন যৌথ কোরাস গায়
তখন আমিই শ্রোতা
আমিই দর্শক।
ঠোঁটটিপে হাসে শুধু পাতা রঙে আঁকা গিন্নী
পাতার চোপা যেমন আছে তেমনি খোঁপাও।
প্রতিদিন ভোরে এমনই দেখি
এমনই দেখি
আর চোখের আরাম খুঁজি
আহা! পাতার কত রঙ কত বাহার।
লাল রঙের দেয়াল
বাজারের এই দিকে স্লটার হাউজ
বাজারের ওই দিকে টিম্বার হাউজ
আরেকটু এগুলেই মন্দির চাতালে যূপকাষ্ঠ
তিনটিই মূলত একই ত্রিভূজের মুখে
আঁকা তিন মুখ
অথবা তিন সিলের এক মোহর।
মোহরে দেখেছি প্রতিদিন
লাশের পাশে লাশ;
আর লাশের পর লাশ--
শুয়ে আছে গভীর ঘুমে লাল রক্ত ছড়িয়ে।
আরো আরো একদিন হাঁটতে হাঁটতে
খুঁজে ছিলাম ফাঁসিকাষ্ঠ আর
পেটমোটা বাকানো মোছে তা দেয়া
রক্তচোখের জল্লাদ।
লালরঙে আঁকা উঁচু লাল দেয়াল
খুব নীচু হয়ে হাতে তুলে দিলো
আইন
আর আইনের ব্যাখ্যা
আর তস্য ব্যাখ্যার ব্যাখ্যা।
জলরঙে আঁকা অন্ধকার
ম্যাজেণ্ডা রঙের বিকাল যে তোমার পছন্দ
সেটি আমার অজানা নয়।
ভাঁজ খোলা কাপড়ের ভেতর থেকে
পেন্সিলে আঁকা পেচানো ধুপগন্ধ
ছড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে ধুনুচি বেয়ে
তোমার উচ্চকিত বিকালের উঠানে।
অথচ দেখো আমার বিকাল সাদামাটা
ম্যাড়মেড়ে বিকাল;
তেলে ভাঁজা পাপড়ও ত্যানাতেনা
হয়ে পড়ে থাকে চায়ের পিরিচে।
চিনি ছাড়া চায়ের কাপে বারবার
সশব্দ চুমুক বিকালে
দৈনিক খবরে মুখ গুঁজে তুমি বিড়বিড় করো
মনোযোগী পরীক্ষার্থীর মতো।
আমি ফেলমারা মার্কসিট
একই ক্লাসে ফি বছর খাঁচাবন্দি পাখি
আর তুমি উচ্চকিত বিকালে পরিযায়ী পাখি
নয়াজলে আঁক আত্মপ্রতিকৃতি
চোখ মেলে তবু বাইরে জলরঙে আঁকা
অন্ধকার দেখবে না কিছুতেই।
পাখি ও আমি
পাখি দেখা ও দেখানোর চেয়ে
ভালো লাগে পাখি শিকার।
পুলকিত হই;
লোভের জলে আলজিব নেচে ওঠে।
টুং টাং টাকরার শব্দে নেচে ওঠে শরীর।
নির্ভার পালকশরীর নিয়ে আকাশে আকাশে
উড়ি ও উড়াই আমার আমোদিত আহলাদ।
আহা! পাখি-- মাংসল পাখি
কষানো মাংসের পাখি
গুলির ছড়রা লেগেছে বুঝি !
রক্ত ঝরছে খুব -- তাই না?
আমিও পাখি তোমার মতো----
এখন যে শরীর দেখছো সেটিও মর্গেজ
কিংবা বলতে পারো ওয়ারলেস শরীর;
নেট কভারেজে বন্দি।
আমার বটে তবু আমার নয়
তোমার জলরঙে আঁকা আকাশ
আর আমার পৃখিবীর মাটি
একটিও তোমার কিংবা আমার নয়--
একদিন তুমি উড়ছিলে
আমি খুন করেছিলাম তোমাকে
একদিন আমি মাটিতে রেখেছি ঘোড়ার পা
আমি খুন হয়েছিলাম
খুন আর খুনি মুলত একটি মুদ্রা
অথবা পণ্যজীবির নিছক পণ্য।
যাপন
টুকটাক কথা বলুক সমস্যা নেই।
প্যাঁচামুখ নিয়ে দুই
চার কথা আমিও বলি কোন অসুবিধা নাই।
পাশাপাশি বসলেই অর্নগল কথা বলা
আমার পছন্দ নয়।
কথা বলতে ভালো লাগে না— সেটি নয় বরং
আমার পাশে অচেনা লোকটির
এতো এতো কথা আমার সন্দেহ বাড়িয়ে দেয়।
পাশাপাশি মানুষ— মানুষের পাশে মানুষ
একই শহরে মানুষ
একই কাঁচা বাজারের মানুষ
আমি তাকে চিনি না সেটি সত্য নয়– সত্য এই
যে লোকটি অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে --
আমাকে সে কোন পরিসর দিচ্ছে না।
তিনি নিজের পরিসর চারলেন ছয়লেন
করে নিয়ে
আমাকে ফেলে দিলেন
গলির মুখে কাঁচা সড়কে।
এই লেখকের আরও লেখা...
বসন্ত বৌরি ।। জ্যোতি পোদ্দার
জ্যোতি পোদ্দারের একগুচ্ছ কবিতা
0 Comments