লেখক হুমায়ূন আহমেদের ধর্মিচিন্তা ও সাহিত্যে তার প্রভাব ।। আকাশ মামুন সরকার

হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ - ১৯ জুলাই ২০১২) 

জননন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদর ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে নানাবিধ তর্ক-বিতর্ক, মিথ আছে। হুমায়ূনকে নানা সমালোচনার তীরে যারা বিদ্ধ করেছেন তাদের একটা বড় অংশ তার সাহিত্যের সমালোচনার পাশাপাশি তার ধর্মবিশ্বাস নিয়েও কটাক্ষ্য করেছেন। ধর্ম বিশ্বাস লেখার ক্ষেত্রে কতটা জরুরী সেটা নিয়ে হয়তো তর্ক করতে পারেন কেউ কেউ, তবে লেখার ক্ষেত্রে ধর্মবিশ্বাস যে একেবারেই ধর্তব্য নয় সেটা বিশ্বসাহিত্য পরিমণ্ডলে পরিষ্কার। ধর্মবিশ্বাসের ধারে কাছে তো নয়ই এমনকি অবিশ্বাসীরাও দাপটের সাথে সাহিত্য চর্চা করেছেন যুগে যুগে এবং তাদের অনেকের সাহিত্যই টিকে আছে যুগযুগ ধরে। তবে বিপত্তি হয়ে দাঁড়ায় তখনই যখন না জেনে কিংবা অর্ধ জেনে অথবা অনুমান নির্ভর কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়।  তবে একটা অঞ্চলের সাহিত্যকে ধরতে সেই অঞ্চলের মানুষের ধর্মীয় আচার-রীতি সাহিত্যে উঠে আসা বাঞ্ছনীয়। ব্রিটিশ আমলে কাজী নজরুল ইসলামকেও এমন বিপত্তির মুখোমুখি হতে হয়েছে। হিন্দু-মুসলিম সমান তালে তাকে ধর্মহীন কিংবা অধার্মিক বলে গালি দিয়েছেন।  আবার নিজেদের স্বার্থে মাথায় নিয়ে জয়ধ্বনি দিয়েছেন। হুমায়ূন ধর্ম বিশ্বাসী ছিলেন কিনা তার বিশ্লেষণ করতে হলে তাঁর ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি তাকাতে হবে তাঁর সৃষ্ট সাহিত্যকর্ম এবং নাটক-সিনামার দিকে। 

হুমায়ূন আহমেদকে কেন অবিশ্বাসী কিংবা নাস্তিক বলা হয়?

ঘটনা এক

কোন এক রোজার মাসের বিকেলে এক সাংবাদিক গিয়েছিলেন হুমায়ূনের সাক্ষাৎকার নিতে। গিয়ে দেখলেন কিছু বন্ধুর সাথে হুমায়ূন তাস খেলছেন আর মুড়ি খাচ্ছেন। সাংবাদিককে দেখেও তার কোন ভাবান্তর হয়নি। হঠাৎ মনে পড়েছে ভঙ্গিতে জানতে চাইলেন সাংবাদিক রোজা কি না? সাংবাদিক হ্যাঁ সূচক মাথা ঝাঁকাতে তিনি খাওয়া বন্ধ করে দিলেন এবং আযানের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলেন। সাথে হাস্য-রসাত্মক ভঙ্গিতে বললেন যাক বাপু তোমার জন্য আমাদেরও কিছু সওয়াব-টোওয়াব হতে পারে। 


ঘটনা দুই 

তিনি যৌবনে ধর্ম-কর্ম করতেন বলে খুব একটা প্রমাণ পাওয়া যায় না। নাস্তিকদের যেমন যুক্তি থাকে তাঁরও তেমন ছিল। ফলে যুক্তি দিয়ে অনেক কিছু প্রতিষ্ঠা করতে চাইতেন যা ধর্ম বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক হয়েছে কিংবা ইসলামি বিশ্লেষণের বাইরে গিয়ে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন। 


ঘটনা তিন

তাঁর বিভিন্ন লেখায় ধর্মীয় অনেক বিষয় হাসি-ঠাট্টা ছলে উপস্থাপন করতে দেখা যায়। যেমন দোয়া ইউনুস পাঠ করে ইউনুস নবী মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। তাঁর সৃষ্ট চরিত্র হিমু পুলিশের হাতে আটক হয়ে হাজতে গিয়ে ঠাট্টাচ্ছলে দোয়া ইউনুস পাঠ করার কথা ভাবেন। 


জ্বীনের অস্বিত্ব নিয়েও তিনি ঠাট্টা-মশকরা করেছেন বিভিন্ন জায়গায়। তাঁর সৃষ্ট চরিত্র মিসির আলী জ্বীনের অস্বিত্ব অস্বীকার করে বলেন যে রোগী জটিল শারীরিক ও মানসিক রোগে আক্রান্ত। যদিও এর বাস্তবতা আছে। কারণ অনেক রোগী পুষ্টিহীনতায় ভুগেন এবং শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড ও ধাতুর অভাবে নানাবিধ জটিলতায় ভুগে থাকেন। গ্রামাঞ্চলে বছরের পর বছর ধরে যাকে বদ জ্বীনের আসর বলেই ঝাড় ফোক করা হয়ে থাকে। বিপত্তি সেখানে নয়-বিপত্তি হলো মিসির আলী জ্বীর অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন করেন। 


এছাড়া কোরান-হাদিসে বিশ্বাসী ও নেক আমলকারীদের পুরষ্কার স্বরূপ পরজনমে হুরপরী দেবার কথা থাকলেও তিনি একাধিক লেখায় উল্লেখ করেছেন বেহেশতে হুরপরীর প্রতি তার বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই।  

 

তাঁর লেখায় বিভিন্ন ভাবে হুজুর চরিত্র উঠে এসেছে। তবে সেগুলো ধর্মীয় গোঁড়ামি বা মৌলবাদী হিসেবে নয় যেটা বাংলাদেশের মানুষ দেখে অভ্যস্ত। তার হুজুর চরিত্ররা মূলত সরল, দরিদ্র এবং গ্রামের সংখ্যাগুরু মতের সাথে একাত্ম হয়ে যাওয়া এবং ক্ষেত্রবিশেষে অল্পবিস্তর আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ। ধর্ম-কর্মে গোঁড়ামি খুব বেশি লক্ষ্যনীয় নয়। 


"এই মেঘ রৌদ্রছায়া"তে হুজুর আল্লাওয়ালা এবং কোরআনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েও যাত্রাভিনয় দেখার বাসনা রাখেন। যদিও ধর্মীয় বিধিনিষেধ এবং সামাজিক অবস্থানের কারণে যাত্রা দেখতে যেতে পারেন না। 


তাঁর এক ঈমান চরিত্র গোপনে টাকার বিনিময়ে সার্কাস দলকে তাঁবু স্থাপনের অনুমোদন দেন। যদিও শুরুতে সে ইসলামের অনুশাসন দেখিয়ে সার্কাসকে নাজায়েজ বলেছিলেন এবং প্রয়োজনে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিলেন। 

 

"শ্রাবাণ মেঘের দিন" উপন্যাসের এক চরিত্র তাচ্ছিল্য করে বলে, "আল্লাহপাক অংকে মনে হয় কাঁচা, তাই ইসলামী আইনে নারী-পুরুষের সম্পদের হিসাবে গরমিল করেছেন কোরআনে। হযরত আলী এই ভুল সংশোধন করে আল্লাহর ইজ্জত বাঁচিয়েছেন।" 

 

ঘটনা চার 

সবচেয়ে খোলাখুলি ভাবে হুমায়ূন চরিত্রের অবিশ্বাসী রূপ ধরা পড়ে অভিনেতা মাহফুজ আহমেদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। সেখানে মাহফুজ জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনি কি বিশ্বাসী? উত্তরে হুমায়ূন এটা সেটা বলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত মাহফুজের দৃঢ়তায় বলেন যে তিনি বিশ্বাসী তবে মাঝে মাঝেই সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠেন। আধুনিক মানুষের এটা একটা সমস্যা বলেও মন্তব্য করেন। 

 

হুমায়ূন আহমেদের আস্তিকতা বা বিশ্বাসী হবার পক্ষে যুক্তি 

হুমায়ূন যে অবিশ্বাসী ছিলেন না তার অনেক প্রমাণই পাওয়া যায়। হয়তো তিনি যৌবনে ধর্ম-কর্ম করেনি, অনেক কিছুতে বিশ্বাসহীনতায় ভুগেছেন। তবুও তার আস্তিকতার বিভিন্ন প্রমাণ মেলে। এবং শেষ জীবনে এটা স্পষ্ট হয় যে তিনি আস্তিক ছিলেন। 


"শ্যামলছায়া"তে হুজুর নতুন বউকে রেখে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছে। তিনি যদি বাংলাদেশের প্রচলিত নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী হতেন তবে হয়তো এই উদারতা দেখাতেন না। অন্তত তাঁর হুজুর চরিত্র মুক্তিযুদ্ধে যেতো না। এই যুক্তি হয়তো ঠুনকো মনে হতে পারে তবে দার্শনিক ও ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে দেখলে প্রচ্ছন্ন ভাবে এই যুক্তির প্রায়োগিক সত্যতা উপলব্ধি করা যাবে। কারণ নাস্তিক হলেই সে ধর্ম বিদ্বেষী হয়ে উঠেন এবং ধর্মকে আক্রমণ করবার প্রবণতা তৈরি হয়। এভাবেই নাস্তিক নিজে আলাদা এবং শ্রেষ্ঠ ভাবতে শুরু করেন এবং তার নিজের দল ভারি করতে চেষ্টা করেন। 


এছাড়াও তাঁর লেখায় দেখা যায় মুসলিম চরিত জীবনের প্রতিচ্ছবি। বাংলাদেশ কিংবা পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্যে দাঁড়ি-টুপি নিয়ে যে একটা অস্বস্তি এবং তাদেরকে দিয়ে সামাজিক কুসংস্কার আর অনৈতিক কাজ করাবার প্রবণতা থাকে হুমায়ূন সেই প্রবণতা দেখাননি। তাঁর বেশিরভাগ হুজুর চরিত্রদের দেখা যায় ভক্তির সাথে আল্লাহ, নবী-রাসূলের নাম নিতে। সালাম বিনিময় করতে, কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতে, অভিপ্রায় প্রকাশে ইনশাআল্লাহ বলতে। এছাড়াও ধর্ম-কর্ম করতে, কোরআন তিলাওয়াত ও যথাযথ ভাবে নামাজ আদায় করতে। মৃতদের মাগফেরাত কামনায় কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়াখায়ের করতে দেখা যায়। 

 

এবার তাকানো যাক তার কিছু সাক্ষাৎকার ও বক্তব্যে


কালেরকণ্ঠকে ২০১২ খ্রিস্টাব্দে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আমেরিকায় থাকা অবস্থায় ঘটে যাওয়া একটা ঘটনার কথা উল্লেখ করেছিলেন। তিনি তখন আমেরিকার নর্থ ড্যাকুটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষক ছিলেন। আমেরিকায় খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করবার জন্য চার্চ থেকে প্রতিনিধিরা মানুষের দোয়ারে দোয়ারে গিয়ে আহ্বান জানান। তাঁর বেলাতেও সেরকম ঘটেছিল। তাদের সাথে আলোচনায় তিনি হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর গুন উল্লেখ করতে গিয়ে বলেছিলেন, আমাদের রাসূল কারও সাথে কথা বলতে গেলে সরাসরি তার মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেতেন। তিনি কথা বলার সময় তার চোখ এবং পুরো শরীর নিয়ে তার দিকে ফিরে কথা বলতেন। যাতে শ্রোতা ভাবতে পারেন যে তিনি সমস্ত মনোযোগ দিইয়ে গুরুত্বের সাথে তার সাথে কথা বলছেন। খ্রিস্টান প্রতিনিধি তখন তাকে বলেছিল, তোমার রাসূল হয়তো স্পন্ডিলাইটিস নামক রোগে আক্রান্ত ছিল। যে রোগে ঘাড় ফেরানো যায় না। কোন দিকে তাকাতে হলে শরীর ও ঘাড় এক সাথে ফেরাতে হয়। তাই হয়তো সে পুরো শরীর শ্রোতার দিকে ফিরিয়ে কথা কবতেন। 

হুমায়ূন জানান তখন আল্লাহ তাকে সাহায্য করেছিল। তিনি সঙ্গে সঙ্গে একটা উত্তর দাঁড় করিয়েছিলেন এবং ওই খ্রিস্টান প্রতিনিধিকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছিলেন। তিনি খ্রিস্টান প্রতিনিধিকে বলেছিলেন, তোমার যুক্তি ভুল কারণ আমাদের নামাজ পড়ার সময় দুইদিকে মাথা ঘুরাতে হয়। রাসূল যদি স্পন্ডিলাইসিসে আক্রান্ত হতেন তবে তিনি মাথা ঘুরাতে পারতেন না। কাজেই তিনি যা করতেন তা শ্রোতার প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই করতেন। জবাব শুনে খ্রিস্টান প্রতিনিধি নিজের ভুল স্বীকার করেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন। 

 

স্টিফেন হকিং একবার দাবি করেছিলেন যে স্রষ্টা এবং আত্মা বলে কিছু নেই। স্বর্গ-নরকও অবাস্তব। সবই মানুষের কল্পনা। তার উত্তরে "রঙপেন্সিল"-এ (পৃ ৭৭-৭৯) বলেন, হকিং সাহেব হয়তো ভুলে গেছেন DNA অনু অমর। এই অমর DNA অনু কি বলে দিচ্ছে না হে মানবজাতি তোমরা ঈশ্বরের অনুসন্ধান করো। সাথে ঈশ্বরের অনুসন্ধান নিয়ে কোরআনের একটা আয়াতও উল্লেখ করেছেন, হে মানবজাতি তোমরা আল্লাহর অনুসন্ধান করো।” 

 

"ফাউন্টেনপেন"-এ (পৃ ৪৬) উল্লেখ করেছেন, নিউইয়র্কয়ের বেলভিউ হাসপাতালে তাঁর পায়ে একবার অপারেশন করাতে গিয়েছিলেন। আগের রাতে হাসপাতালে তাঁর কাছে একজন কাউন্সিলর গিয়েছিলেন। এসে গিজ্ঞেস করেছিলেন তিনি মুসলিম কি না। জবাবে হ্যাঁ বলায় কাউন্সিলর অর্থের বিনিময়ে তার জন্য দোয়ার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন। তিনি অসম্মত হলে কাউন্সিলর তাকে জিজ্ঞেস করেন তুমি কি চাও না তোমার ধর্ম মতে তোমার জন্য প্রার্থনা হোক। হুমায়ূন বলেছিলেন অর্থের বিনিময়ে প্রার্থনায় আমার বিশ্বাস নেই। কাউন্সিলর তাঁর অপারেশনটা জটিল উল্লেখ করে পুনরায় জিজ্ঞেস করেছিলেন তুমি যদি চাও আমি তোমার জন্য বিশেষ ছাড়ে প্রার্থনার ব্যবস্থা করাতে পারি। হুমায়ূন জবাবে বলেছিলেন ছাড়ের প্রার্থনাও তিনি করাবেন না। কাউন্সিলর তখন উপযাযিত হয়ে জানতে চেয়েছিল সে নাস্তিক কি না। জবাবে হুমায়ূন বলেছিল আমি নাস্তিক না বলেই ডিসকাউন্ট বা অর্থের বিনিময়ে প্রার্থনায় তিনি বিশ্বাসী নন। 


 

হুমায়ূন যে বিশ্বাসী ছিলেন সেটা বুঝতে চলুন এবার দৃষ্টি দেওয়া যাক তাঁর গানে। জীবন সায়াহ্নে এসে তিনি যে গানটি বেশি শুনেছেন সেটা হলো,

মরিলে কান্দিস না আমার দায় রে যাদুধন...
মরিলে কান্দিস না আমার দায়

সুরা ইয়াসীন পাঠ করিবা বসিয়া কাছায়
আমার প্রাণ যাওয়ার বেলায়
বিদায় কালে পড়ি না যেন শয়তানের ধোঁকায়

 

এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন। কারণ অবিশ্বাসী কারও কাছে এই গানের কোন অর্থ থাকতে পারে না। 

 

৪ 

শেষ জীবনে হুমায়ূন আহমেদ ধর্মিচিন্তায় প্রভাবিত হয়ে পড়েছিলেন ব্যাপক ভাবে। তাঁর অসমাপ্ত লেখা ছিল "নবীজী"। শেষ করার আগেই তিনি পাড়ি জমান পরপারে। নবীজী লেখা শুরু করবার পেছনে মাসিক মদীনার সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দীন খানের অনুরোধ ভীষণ ভাবে প্রভাব রেখেছিল। মাওলানা মহিউদ্দীন খানের আনুরোধ ছিল নবীজীর জীবনী যেন হুমায়ূন আহমেদ তার লেখায় নিয়ে আসেন। সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে হুমায়ূন আহমেদও কথা দিয়েছিলেন নবীজীর জীবনী তিনি লিখবেন। এছাড়াও এ বিষয়ে হুমায়ূন কথা বলেন মোস্তফা জামান আব্বাসীর সাথে। শোনা যায় নবীজী লেখার সময় হুমায়ূন আহমেদের জীবনে অনন্য এক পরিবর্তন আসে। তিনি গভীর ভাবে নবীজীর প্রেমে পড়ে যান এবং অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন নবীজীকে স্বপ্নে দেখার। নবীজেকে স্বপ্নে দেখার পর বাকী লেখাটুকু শেষ করবেন। এবং তিনি এরকম ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন যেন নবীজী লিখতে লিখতেই তার মৃত্যু হয়। সেই থেকে নবীজীকে স্বপ্নে দেখতে কিছু আমল করতে থাকেন এবং সিরাত পড়তে থাকেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে জানা যায়-নিউইয়র্কে চিকিৎসার সময় হুমায়ূন নিয়মিত নামাজ পড়তেন। 

 

নবীজীকে স্বপ্নে দেখে নবীজী লেখার ইচ্ছে পোষণ করে লেখা স্থগিত করে রাখেন। তবে আমেরিকাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক রাতে হঠাৎ করেই আবার নবীজী লেখা শুরু করেন। লেখা এগিয়ে চলতে থাকে। তবে তার শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হয় এবং একপর্যায়ে মারা যান। তবে নবীজীকে স্বপ্নে দেখে পুনরায় লেখা শুরু করেছিলেন কি না এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায় না।  



আরও পড়ুন... 

হুমায়ূন আহমেদের নাটকের শক্তিশালী দিকগুলোই দূর্বল দিক





Post a Comment

0 Comments