যযাতি দেবলের কবিতা ।। ভগ্নদূত ও অন্যান্য



ভালো থেকো

মন খারাপের ভিড়ে কিছু কস্তুরী থাকা ভালো

পাশ কাটিয়ে গাড়িতে উঠে নিঃশব্দে বন্ধ কর দরজা

হলুদ আঙরাখার ফাঁকে বিভাজিকায় স্বেদ বিন্দুর ঐশ্বর্য

টেপা হাসি গজদাঁত যুদ্ধ জয়ের ঘোষণা

হাইওয়ে ছাড়িয়ে হিলহিলে ধানের হাওয়ায়

ঠাঁই বদল করে গর্বিত আঁচল।


মন খারাপের ভিড়ে এটুকু সুগন্ধ থাক্


মন খারাপের ভিড়ে কিছু কস্তুরীর ছোঁয়া…

আশ্চর্য  ভি' র উপরে অবাক ফ্লাওয়ার ভাস

এবং কোমর ছাপিয়ে চুলের ফুলঝুরি

বাতাসে তখন দুর্বার ছেনালিপনা।

 

কারও মন খারাপের ভিড়ভাট্টায় তোমার কী এসে যায়!

তুমি পর্দা বদলাও জল ছিটে দাও অর্কিডে

আঃ! বাতাসের গন্ধে এতো উগ্রতা কীসের?

প্রসাধন না বাসি রাতের টলটলে ককটেল!

 

মন খারাপের ভিড়ে গাঁয়ের মোড়ে

দেখা হয়নি কদম কেশরের রং বদলানো

এখন চোখ থেকে মুছে ফেলেছি সে দুর্লভ ছবি


ভি'র দুপাশে ওই স্ট্যাপের চেপে বসা…

 

কবিতা অসমাপ্ত রেখে

কবিতা অসমাপ্ত রেখে তাকাই হেঁশেলের আহ্বানে

অবাক কলমদানি কাপড়ে হলুদ দাগের চিত্রভাষায়

তোমাকে দিলাম এই দৃশ্যছবি, দ্যাখো

               তা নিয়ে দু'মেটে হতে পারে কি না!


অধীর বালক মন মাটি ছানে আঙুলের চাপে

শ্লোকের মহিমার পূর্ণতা গড়ে দশ হাতে

তোমাকে খুঁজতে চাই বটের ছায়ায় ধুলো খেলা

মিছিমিছি রান্নাবাটি

              জ্যোৎস্না মাখে কলাবউ

                          নিশাজলে ধুয়ে নেয়

                                                    দেখন-হাসি মুখ

 

ভগ্নদূত

দূত অবধ্য!একাই আসে।

খবর দেয়, নেয় ফিরে যায়।

সে নির্ভয়।

 

এখন দলবল নিয়ে দূত আসে

ভয় পায়।

ফ্লপ শো শেষে পগারপার!

 

ফেঁসেছে কালিরামের ঢোল

তাই নয়া ভেক

তাঁবু গাড়বেন গাঁয়ে গাঁয়ে

জানোই তো

ভেক না ধরলে ভিক্ মেলা ভার!


বাছা হে!

ভগ্নদূত এলো বলে…

 


ওম

ঝাঁ ঝাঁ দুপুরের রোদে আমি শূন্যতাকে ছুঁয়ে থাকি…

 

হল্কা বইছে! আগুনের হল্কা! বাড়ছে তো বাড়ছেই

জল নেই, শুধু রোদ, রোদের ঝাপটা।

                     মাটি এখন জলের অপেক্ষায়


আকাশ পুড়তে পুড়তে ছাই

ঝিম মারা গাছগাছালির ফাঁকে

একটি পাখি ঘাড় গুঁজে নীরবে

বৃষ্টির স্বপ্ন আকঁতে ব্যস্ত।


জানলা কপাট বন্ধ ঘর আঁধার

দিনের শেষে দ্বিতীয় স্নান দৃশ্যটিও স্থির

নিঃসঙ্গ পাখিটি স্নান চায়

সেও কি নির্জনতার আশ্রয়ে!


আমাকে বলতেই হচ্ছে কবে যাবে এই শীত পোড়ানো রোদ

কবে ধারাজল

কবে ফসল কাটার শেষে শীত, শীতের জন্য ওম…

 

আলাপন

কী কেমন আছো?

আকাশ ভার ভার বাতাস যেন কেমন!

ভালো নেই।আমাদের মন ভালো নেই। তেমন।         

                        ভেতরে ক্ষয়!


কেমন আছো তোমরা সবাই?

দেখ এখানে ওখানে সিঁদুরে মেঘ;

ঘরপোড়া।কাঁপি তাই।

                                                    ভয়!

 

যদি বৃক্ষের দিকে তাকাই

দৃঢ়তাকে অনুভব করি;

ছুঁই! ছুঁয়ে দেখি। সে কেমন নীরব সরবরাহকারী    

                           অম্লজান।


সেইতো সমিধ,  সেই-ই পাবক

তাঁর কাছে আলো প্রাণের প্রণোদনা

রক্তে ঝড়, কলতান,দারুণ

                   ঝাঁপান।

 

কেমন আছো আর সকলে!

ভালোতো? প্রাণে প্রাণ!

তাইতো বেশ! তা বেশ!

            হে প্রাণেশ!


এই লেখকের আরও লেখা...






Post a Comment

4 Comments

  1. অসাধারণ কবিতাগুলো। প্রত্যেকটি কবিতাই পাঠককে কাছে টেনে নেয়, ভালো লাগার নেশা ধরিয়ে দেয়

    ReplyDelete
    Replies
    1. অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

      Delete
  2. সবগুলোই সুন্দর। প্রতিটি কবিতার গড়নে স্পষ্ট ফুটে ওঠে জীবনের অনুসঙ্গ, মাটির গন্ধের পরশ। সবটাই মানুষকে নিয়ে মানুষের দিনযাপনের পরতে পরতে - সাম্প্রতিক সামাজিক রাজনৈতিক
    ঘটনাবলীর প্রাসঙ্গিকতাতেও তা উজ্জ্বল।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমি কবিতার বন্ধুও নই সখাও নই, সুধু নিজের মনের গোপনে আপনার মত একটা ভলোবাসা নিয়ে আসি! তোর সব লেখাই আমার ভালো লাগে, কবিতা সাথে আমার গোপন প্রেম।

      Delete