প্রীতিলতা: হৃদয়ে যার ছিল বিপ্লবের স্ফুলিঙ্গ ।। রুম্পা রুমানা

 

 

মা ও মার্তৃভূমি স্বর্গের চেয়েও শ্রেয়। সহজ অথচ শক্তিশালী এই বাক্যকে অন্তরে ধারণ করে অনেক দেশ প্রেমিক সন্তান জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য। তেমনই এক বীরকন্যা জন্মেছিলেন অবিভক্ত ভারতে। বৈষম্যহীন সমাজ এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন শোষণহীন মার্তৃভূমি ছিল যাঁর স্বপ্ন। 

পলাশী যুদ্ধে জয়লাভ করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও এর কর্মচারীরা যে শাসন শুরু করেছিলো তা থেকে জনগণের মুক্তি লাভের উপায় সহজ ছিলো না। কোম্পানির কর্মচারীরা বছরে ২০ থেকে ৩০ লক্ষ পাউন্ড ভারত থেকে ইংল্যান্ডে পাচার করতো। এতে ভারতের অর্থনীতি একেবারে বিধস্ত হয়ে পড়েছিলো। প্রকৃত অর্থে ব্রিটিশরা ভারতকে শুষে নিজেরা অর্থ সম্পদে পরিপূর্ণ হয়েছিল। আর ভারতবর্ষ পরিণত হয়েছিল একটি দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশে। যুগে যুগে অত্যাচারী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তাই জনগণের মনে ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। উপনিবেশিক এই দানবের নিকট থেকে মুক্তি পেতে গড়ে ওঠা বিপ্লবীদেরই একজন আমাদের অগ্নিকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। 

১৯১১ সালের ৫ মে বর্তমান চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জন্ম। জগদ্বন্ধু ওয়াদ্দেদার ও প্রতিভারানীর দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন তিনি। পিতা ছিলেন মিউনিসিপাল অফিসের হেড কেরানি। পারিবারিক পদবী দাশগুপ্ত হলেও নবাবী আমলে কোন এক পূর্বপুরুষের পাওয়া ওয়াহেদেদার উপাধি থেকেই তারা হয়ে উঠেন ওয়াদ্দেদার। প্রীতিলতার ডাক নাম ছিলো রানী। ছোটবেলা থেকেই শান্ত, অন্তর্মুখী স্বভাবের প্রীতিলতা সাংসারিক সমস্ত কাজে মাকে সহযোগিতা করতেন। 

১৯১৮ সালে তিনি চট্টগ্রাম ডাঃ খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। প্রাথমিকের পড়াশোনা শুরু হয়। অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় সব শিক্ষকের প্রিয় হয়ে উঠেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। বিশেষ করে ইতিহাসের শিক্ষক ঊষাদি প্রীতিলতাকে খুব স্নেহ করতেন। তিনি প্রীতিলাকে ঝাঁসীর রানী লক্ষীবাইয়ের ইংরেজ সৈন্যদের সাথে লড়াইয়ের ইতিহাস শুনাতেন। বিজ্ঞানী হবার স্বপ্ন দেখা প্রীতিলতা ঊষাদির সংস্পর্শে এসে একসময় হয়ে উঠলেন বিপ্লবী। 

শিল্প-সাহিত্য এবং দর্শনের প্রতি ছিলো তাঁর প্রবল আগ্রহ। সেই সাথে ব্যাডমিন্টন খেলায় ছিলেন পারদর্শী। আরও একটা গুন ছিলো দারুণ বাঁশি বাজাতেন। 

১৯২৮ সালে এই স্কুলে থেকেই বেশ কয়েকটি বিষয়ে লেটার মার্কসহ মাধ্যমিকে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন। তাঁর ইচ্ছামতে ইডেন কলেজে আই.এ পড়ার জন্য ভর্তি করিয়ে দেন পিতা। ১৯৩০ সালে উচ্চমাধ্যমিকে মেয়েদের মধ্যে প্রথম ষ্ট্যান্ড করেন ও বোর্ডে পঞ্চম স্থান লাভ করেন। কৃতিত্বের এই ফলাফলের জন্য তাঁকে মাসিক ২০ টাকার বৃত্তি প্রদান করা হতো। এই সুযোগে তিনি বি.এ পড়তে যান কলকাতার বেথুন কলেজে। ১৯৩২ সালে তিনি ডিস্টিংশনসহ বি.এ পাশ করেন। কিন্তু বিট্রিশবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত থাকায় তাঁর ও সহপাঠী বীণাদাশ গুপ্তের ফলাফল স্থগিত রাখে ব্রিটিশ সরকার। ২০১২ সালের ২২ শে মার্চ কলকাতায় বেথুন কলেজের সমাবর্তনে তাঁকে মরণোত্তর স্নাতক হিসেবে সম্মান দেয়া হয়। 

ইডেন কলেজের ছাত্রী নিবাসে থাকাকালীন সময়ে প্রীতিলতা বিপ্লবী লীলা নাগের সংস্পর্শে এসেছিলেন। লীলা নাগ ছিলেন দিপালী সংঘের প্রধান বিপ্লবী। দিপালী সংঘ ছিলো শ্রীসংঘের নারী শাখা। দিপালী সংঘের সদস্য ফর্মটি প্রীতিলতা তাঁর নিকটত্মীয় দাদাকে দেখিয়ে সদস্য হওয়ার ইচ্ছের কথা প্রকাশ করেন। দাদা পূর্ণেন্দু দস্তিদার ছিলেন কংগ্রেস নেতা মাস্টারদা সূর্যসেনের অনুগত। তিনি এই ফর্মটি বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেনকে দেখালে তিনি প্রীতিলতাকে বিপ্লবী দলের সদস্য করেন। দীপালী সঙ্ঘে যোগ দিয়ে প্রীতিলতা লাঠিখেলা, ছোরাখেলা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।  

১৯৩০ সালে আই.এ পরীক্ষা দিয়ে প্রীতিলতা চট্টগ্রাম ফিরে আসেন। এর আগের রাতেই বিপ্লবীরা দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ধ্বংস করে দেয় পুলিশ লাইন, টেলিফোন অফিসসহ অস্ত্রাগার। ইতিহাসে এই বিদ্রোহ 'চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ' নামে পরিচিত। এই ঘটনা প্রীতিলতাকে আরো উজ্জীবিত করে। আই.এ পাশের পর তিনি চলে যান কলকাতা। বেথুন কলেজে পড়ার সময় দাদা পূর্ণেন্দু দস্তিদারের সাথে দেখা করতে প্রায়ই গুণু পিসির বাসায় যেতেন। যুব বিদ্রোহের পর বিপ্লবীরা এখানেই আশ্রয় নিয়েছিলেন। এই সময় পূর্ণেন্দু দস্তিদার গ্রেফতার হলে মনোরঞ্জন রায় নারী বিপ্লবীদের সংগঠিত করার দায়িত্ব নেন। মনোরঞ্জন রায় যেহেতু রসায়নের ছাত্র ছিলেন তাই মাস্টারদা তাকে বোমা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত, রেণুকা রায়, কমলা চ্যাটার্জিসহ চারজন মিলে তখন মাস্টারদার দেয়া ইস্তেহার সাইক্লোস্টাইলে ছাপিয়ে কলকাতার বিভিন্ন জায়গাতে বিতরণ করতেন। মনোরঞ্জনরায় ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছিলেন প্রীতিলতা এবং কল্পনা দত্ত তাঁদের কর্তব্যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যদিও মনোরঞ্জন রায় কদিন পরেই গ্রেফতার হয়েছিলেন। এদিকে পুলিশ ইন্সপেক্টর টি জে ক্রেগকে হত্যা পরিকল্পনায় মাস্টারদা মনোনীত রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ও কালীপদ চক্রবর্তী বোমাসহ গ্রেফতার হয়। তারিণী বিশ্বাসকে হত্যার অপরাধে রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের কাছে গেলে তিনি চিঠি লিখে প্রীতিলতাকে রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে দেখা করার পরামর্শ দেন। একজন দন্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামীর সাথে দেখা করা সহজ ছিলো না। অনেক চেষ্টা করে ছদ্মনাম নিয়ে প্রীতিলতা তাঁর সাথে দেখা করেন। প্রীতিলতাকে মানসিকভাবে আরো শক্তিশালী করে তুলেছিলেন বিপ্লবী রামকৃষ্ণ বিশ্বাস। ১৯৩১ সারের ৪ আগষ্ট রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের ফাঁসি কার্যকর হয়। এই ঘটনা প্রীতিলতাকে একদম বদলে দিয়েছিলো। তিনি হয়ে উঠেন পুরোপুরিভাবে বিপ্লবী। 

রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের ফাঁসির পর তাঁকে নয় মাস কলকাতায় থাকতে হয়েছিলো। বি.এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য। 

পরীক্ষার পর তিনি ফিরে আসেন চট্টগ্রামে। এসেই দেখেন পিতার চাকরি নেই। সংসারে অভাব অনটনের হাহাকার। তিনি তাই দ্রুত নন্দন কানন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা পদে চাকরী নেন। সংসারে আর্থিক সহযোগিতা ও মাকে নানান সাংসারিক কাজে সাহায্য করেই তাঁর দিন কাটছিলো। কিন্তু মনে তো আসলে বিপ্লবী দানা বেধেছে। তছাড়া তিনি তখন মাস্টারদার সাথে দেখা করার জন্য উদগ্রীব ছিলেন। তাই কলকাতায় এসে বিপ্লবী কল্পনা দত্তের সাথে দেখা করেন। ইতিমধ্যে কল্পনা দত্ত মাস্টারদার সাক্ষাৎ লাভ করেছেন। প্রথমে প্রীতিলতার টান দেখে বিপ্লবী নির্মল সেনের সাথে দেখা করিয়ে দেন। 

দেশের প্রতি প্রীতিলতাকে টান দেখে বিপ্লবী নির্মল সেন আশ্বস্ত হয়েছিলেন। একজন বিপ্লবীকে যেমন দৃঢ়চেতা হতে হয় ঠিক তেমনই যেন এই মেয়েটি প্রীতিলতার ব্যাকুলতা ও আগ্রহ দেখে একদিন মাস্টারদার সাথে দেখা করতে নিয়ে যান। মাস্টারদাকে সামনে দেখে প্রীতিলতা যেন কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। শান্ত, চাপা স্বভাবের মেয়েটি ভেতরে কতটা উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন তা তাঁর আচরণ দেখেই মাস্টারদা আঁচ করতে পেরেছিলেন। তিনিও বুঝে নিয়েছিলেন এই মেয়েটি খাঁটি হীরা। যার ভেতরে অল্প বয়সেই জন্ম নিয়েছে দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের পর অনেক দিন পার হয়েছে। বিপ্লবীরা অনেকেই নিহত হয়েছেন কেউ কেউ গ্রেফতার। সূর্য সেন এবং নির্মল সেন নতুন পরিকল্পনা করছেন। আত্মগেপানকারী অনেক বিপ্লবী গ্রাম থেকে গ্রাম ঘুরে সংগঠনের প্রচার চালাচ্ছিলেন। 

ধালঘাটের সাবিত্রী দেবীর দোতলা বাড়িটি ছিলো বিপ্লবীদের আশ্রয়স্থল। বিপ্লবীদের কাছে সাবিত্রী দেবী হয়ে উঠেছিলেন মাসিমা। এই বাড়িতে থেকে বিপ্লবীরা লেখালেখি করতেন, বই পড়তেন আর বিপ্লবের পরিকল্পনা সাজাতেন। মাস্টারদা, নির্মল সেন ছাড়াও আরেক পলাতক বিপ্লবী সূর্যসেনের সাথে দেখা করতে যান ধলঘাটের এই আস্তানায়। তাঁদের এই গোপন বৈঠকের কথা জেনে যায় ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনী। এর আগে মে মাসেই সূর্য সেন ও নির্মল সেনকে জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ বিভাগ। ঐদিন মাস্টারদা ও প্রীতিলতা পালিয়ে যেতে পারলেও পুলিশের গুলিতে নিহত হন নির্মল সেন ও অপূর্ব সেন। এদিকে সাবিত্রী দেবীর বাড়ি ও আশেপাশে তল্লাশি করে কয়েকজনের ছবি ও কাগজপত্র উদ্ধার করে পুলিশ। যেখানে প্রীতিলতার ছবিও ছিলো। রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে জেলে দেখা করার সময় সমস্ত বিবরণ প্রীতিলতা যে ডায়েরীতে লিখেছিলেন পুলিশ সেটিও  উদ্ধার করে। ঐ হাতের লেখার সাথে মিলোনোর জন্য পুলিশ প্রীতিলতার বাড়ি পৌঁছে বুঝতে পারে প্রীতিলতা পালিয়ে গেছেন। পুলিশ কল্পনা দত্তের বাড়ি গিয়েও তেমন কোন তথ্য না পেয়ে ১৩ জুলাই ১৯৩২ আনন্দবাজার পত্রিকায় 'চট্টগ্রামের পলাতক' শিরোনামের একটা সংবাদে ছাপে। যেখানে লেখা হয়েছিল চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানার ধলঘাটের শ্রীমতী প্রীতি ওয়াদ্দেদার গত ০৫ জুলাই, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম শহর হইতে অন্তর্ধান করিয়াছেন। তাঁহার বয়স ১৯ বৎসর। পুলিশ তাঁহার সন্ধানের জন্য ব্যস্ত। 

১৯৩০ সালে যুব বিদ্রোহের মূল পরিকল্পনা ছিলো পাহাড়তলীর ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ। চারদিকে কড়া পাহারা দেওয়া এই ক্লাবটি ছিলো ইংরেজদের প্রমোদকেন্দ্র এই ক্লাবের সামনে সাইনবোর্ডে লেখা ছিল কুকুর এবং ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ। ভারতীয়দের উপর ইংরেজদের শোষণের চিত্র এই একটি বাক্য দিয়েই অনুধাবন করা যায়।  

১৯৩২ সালের ১০ আগস্ট ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ ব্যাপারে ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর, শনিবার তিনি পুনরায় আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। 

এবারের দায়িত্ব দেন নারী বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারকে। প্রীতিলতাও যেন এমন মুহূর্তেরই অপেক্ষায় ছিলেন। যেহেতু পাঞ্জাবীদের কোয়ার্টারের পাশ দিয়েই ইউরোপীয় ক্লাবে যেতে হতো। তাই নির্ধারিত তারিখে প্রীতিলতা ও সহযোদ্ধারা পাঞ্জাবী পোশাকে নিজেদের সজ্জিত করে নেন যাতে কেউ সন্দেহ না করে। এসময় বিপ্লবীদের খবরাখবর দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন ইউরোপিয়ান ক্লাবের বাবুর্চি যোগেশ মজুমদার। তিনি নানান সময় ইংরেজদের খারাপ আচরণের শিকার হয়েছিলেন বলে ইংরেজদের প্রতি তার মন তিক্ত হয়ে উঠেছিল। রাত দশটার পর ক্লাবের ভেতর থেকে যোগেশ মজুমদার আক্রমণের সিগন্যাল পাঠাতেই বিপ্লবীরা আক্রমণ শুরু করে। উপর্যুপরি গুলি এবং বোমার আঘাতে ক্লাব হয়ে উঠে মৃত্যুপুরী। ক্লাব থেকেও পাল্টা প্রতিরোধ করছিলো ইংরেজ অফিসাররা। অন্ধকার ক্লাবের ভেতর থেকে আসা একটি গুলিতে প্রীতিলতা আহত হন। ঐ আক্রমণে একজন ইংরেজ নারী নিহত ও এগারোজন আহত হয়। 

আক্রমণ শেষে আহত প্রীতিলতা সহযোগীদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। ইংরেজদের হাতে ধরা পড়ার চেয়ে জবীন দেয়াই শ্রেয়। তাই পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আহত প্রীতিলতা পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন। প্রীতিলতা হয়তো সেদিন পালিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু আহত অবস্থায় তিনি সঙ্গীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে চাননি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী প্রীতিলতা মৃত্যুর কারণ ছিলো পটাশিয়াম সায়ানইড, গুলি নয়

মেধাবী ও বিপ্লবী প্রীতিলতাকে জানলাম এবার শান্ত ও কোমল স্বভাবের প্রীতিলতাকেও না হয় জেনে নিই

১৯৩০ সালে প্রীতিলতার বাড়িতে এক আড্ডায় আলাপচারিতা প্রসঙ্গে কল্পনা দত্ত লিখেছিলেন কথা হচ্ছিল, পাঁঠা কাটতে পারব কি না আমি বলেছিলাম, “নিশ্চয়ই পারব, আমার মোটেই ভয় করে না

প্রীতি উত্তর দিয়েছিল ভয়ের প্রশ্ন না, কিন্তু আমি পারব না নিরীহ একটা জীবকে হত্যা করতে। একজন তৎক্ষণাৎ প্রশ্ন করল কী দেশের স্বাধীনতা জন্যও তুমি অহিংসা উপায়ে সংগ্রাম করতে চাও?

আমার মনে পড়ে প্রীতির স্পষ্ট জবাব ছিলো এরকম, “স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিতেও পারব, প্রাণ নিতে মোটেই মায়া হবে না। কিন্তু নিরীহ জীব হত্যা করতে সত্যি মায়া হয়, পারব না

এমন কোমল হৃদয়ের মানুষটাই প্রাণ দিয়েছিলেন দেশকে ভালোবেসে। অত্যাচারী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অন্তরে জমে থাকা দ্রোহকে এভাবেই ইতিহাসের পাতায় গেঁথে যান বীরকন্যা বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। উল্লেখ্য পাহাড়াতলরি ইউরোপীয়ান ক্লাবটি এখন বীরকন্যা প্রীতিলতা জাদুঘর নামে পরিচিত। 

জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো স্বাধীনতাকামী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের কর্মের প্রতি


 এই লেখকের আরও লেখা... 

প্রেম ও বিপ্লবের কবি ভ্লাদিমির মায়াকোভস্কি



Post a Comment

0 Comments