কেমাল'এরেন কেমাল বার্ক তুরস্কের একজন কবি। তিনি পেশায় শিক্ষক। স্বাস্থ্য পরিসেবামূলক অনেক কর্মকান্ডের সঙ্গেও তিনি যুক্ত। তুরস্কের অন্যতম জনপ্রিয় পত্রিকা সাঙ্গুরলুর সাপ্তাহিক কবিতা কর্ণারের সমস্ত দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। তিনি পত্রিকার অন্যতম সাংবাদিক ও সম্পাদক। তাঁর প্রেমের দুটি কবিতা অনুবাদ করেছেন মহুয়া দাস
আমি তোমাকে দেখতে এসেছি প্রিয়
আমি তোমাকে দেখতে এসেছি প্রিয়,
তোমার দিকেই আমার হৃদয় ধাবিত।
আড়ালে বলি, মৌমাছিটির প্রাণ সংশয় প্রায়
এ তিন দিনের পৃথিবীতে এ কেমন ভবের খেলা!
তীর তার লক্ষ্য স্থির রেখে অপেক্ষমান
প্রিয়, আর কে জানে বলো,
আমি যে এসেছি তোমার কাছে।
আমার জীবনে সাকুল্যে আর তিনটি কি পাঁচটি ঋতু প্রিয়।
এ জীবন শিকড় থেকে জেগে
মৌমাছির মতো উড়ে।
পিঁপড়েরা বেরিয়ে পড়েছে,
একমাত্র প্রাণী যে ভালোবাসার জন্যে মরতেও রাজি।
আমি সেই বন্ধু প্রিয়,
তোমাকে দেখতে এসেছি।
আমি জানি আমার অন্তরাত্মা, তোমার জন্যেই জাগ্রত প্রিয়
দ্যাখো আকাশের তারারাও
ঈর্ষা করছে ।
আমার অন্তরের প্রদীপটি তোমার জন্যে জ্বলছে l
এ এক অব্যক্ত পাশাখেলা
যা সহ্য করে চলেছি।
তবু গোলাপের সুগন্ধে পরিপূর্ণ হৃদয়।
আমি তোমাকে দেখতে এসেছি প্রিয়।
তোমার দিকে তাকিয়ে থেকেই
বা কি হবে?
আর তোমার সুমধুর কথা শুনেই বা কি হবে
যদি তোমাকেই না জানলেম,
যদি তোমার রূপ আমাকে চিন্তায় না ফেলে,
সে কিসের ভালোবাসা?
যে আগুন তুমি জ্বালাও
আমি সেই আগুনে ধাবিত হই।
আমার প্রেমিক হৃদয়
তোমারই অপেক্ষায় দিন গোনে।
আমি এসেছি তোমাকে দেখতে প্রিয়।
ছাইয়ের ঘ্রাণ এখন চারদিকে,
সেটাই উদ্বেগের কারণ।
শেষ সময় ঘনিয়ে আসার আগে
হৃদয় তুমুল সুরে হাসতে চায়।
দেখি মৃত্যুর আগে লোহার শৃঙ্খল যদি চূর্ণ করতে পারি,
আমাকে সঠিক দিশা দেখাও প্রিয়,
আমি তোমাকে দেখতে চাই।
অর্ধেক আপেল
আমি জানি।
আপেলের অর্ধেক যদি হয় আমার হৃদয়
বাকি অর্ধেকটা তোমার।
তীক্ষ্ণ সূচের আঘাতে তোমার হৃদয় যদি হয় ক্ষতবিক্ষত,
আমি দেখেছি, আমার হৃদয় থেকেও রক্ত ঝরে।
আমার ভাগ্য পূর্বনির্ধারিত ছিল,
বহু বছর আগে থেকেই।
তাই আমাদের হাত বাঁধা পড়ল একে ওপরের সঙ্গে,
আমাদের বিবাহবাসর ছিল আকাশ ছোঁয়া ও জাঁকজমকপূর্ণ।
আমার হৃদয়ে জ্বলতে লাগলো আবেগপূর্ণ ভালোবাসায়।
যদি তুমি হও একটি গোলাপ আর আমি একটি কোকিল,
আমাদের নিজেদের শাখাগুলি ভরে উঠবে যেন নতুন প্রস্ফুটিত কুঁড়িতে।
তোমার ভালোবাসার আঙ্গুর বাগান ভরে উঠবে ফুলে, ফলে।
ভালোবাসা জমে জমে যখন পাহাড়,
এর অপূর্ব মৃদু সুবাস ছড়িয়ে পড়বে চারদিকে।
আমাদের দীর্ঘায়ু বেড়ে হবে দ্বিগুণ।
নীল হৃদয় এখন ভালোবাসার নদীতে ঝাঁপ দিতে চাইছে,
সূর্যের মতো উজ্জ্বল হয়ে আলো দিতে চাইছে।
যদিও নিজের দেহের উত্তাপে এখন আগুনের লেলিহান শিখা যেন সে।
সেই আগুনে সে নিজেই জ্বলেপুড়ে খাক।
এই জ্বলে খাক হয়ে যাওয়া হৃদয়
প্রবাহিত হতে চাইছে আজ সুতীব্র ভালোবাসায়।
2 Comments
কবিতায় শেকল ভাঙার আকুতি পাঠককে ছুঁয়ে যায়। দ্বিতীয় কবিতায় দেখি আগুন যখন সুতীব্র ভালবাসায় পরিণতি পায় তখন আশ্চর্য ভাললাগায় আচ্ছন্ন হয় হৃদয় মন প্রাণ। শুভেচ্ছা।
ReplyDelete— যযাতি দেবল।
অনুবাদ ভালো লেগেছে।
ReplyDelete