রিছাং ঝর্ণায় দর্শনার্থীদের বিনোদন
শুক্লপক্ষ ডেস্কঃ
খাগড়াছড়ির ঝর্ণাগুলোর মধ্যে অন্যতম রিছাং ঝর্ণা। মারমা ভাষায় এর নাম রিছাং ঝর্ণা, ‘রি’ শব্দের অর্থ পানি আর ‘ছাং’ শব্দের অর্থ গড়িয়ে পড়া। পাহাড় থেকে অবিরত পানি গড়িয়ে পড়ে বলেই এর নামকরণ করা হয়েছে ‘রিছাং ঝর্ণা’। এছাড়াও স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের কাছে এটি ‘তেরাং তৈকালাই’ নামেও পরিচিত।
রিছাং ঝর্ণা পর্যটকদের দ্বারা প্রথম আবিষ্কৃত হয় ২০০৩ খ্রীস্টাব্দে। তারপর থেকে দর্শনার্থীদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠে রিছাং ঝর্ণা। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে এগার কিলোমিটার দূরে আলুটিলা পেরিয়ে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে মূল রাস্তা থেকে উত্তরে অবস্থিত রিছাং ঝর্ণা। যাত্রাপথে অদূরে কিংবা পথের ধার ঘেঁষে উঁচু-নীচু সবুজ পাহাড়, বুনোঝোঁপ, নামহীন রঙ্গীন বুনোফুল পথিকে নিয়ে যাবে কল্পনার এক অজানা রাজ্যে।
রিছাং ঝর্ণা, খাগড়াছড়ি
মূল সড়ক ছেড়ে দীর্ঘ পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে প্রায় দুই শতাধিক সিঁড়ি বেয়ে নেমে যেতে হয় নিচে। নিচে নামতে নামতেই আপনি শুনতে পাবেন ঝর্ণার পানি পতনের মিষ্টি কিন্তু বিক্ষুব্ধ বিরামহীন শমশম শব্দ। সিঁড়ি শেষ হতে না হতেই আপনার চোখ জুড়িয়ে দেখা মিলবে ঝর্ণার। পাহাড়ের বুক চিড়ে প্রায় ১০০ ফুট উঁচু থেকে নিচে আছড়ে পড়ছে ঝর্ণার পানি প্রবাহ। থমকে গিয়ে হয়েতো সহসাই আপনার মনের কানে বাজতে পারে সুবীর নন্দির গান-
পাহাড়ের কান্না দেখে তোমরা তাকে ঝর্ণা বলো
ওই পাহাড়টা বোবা বলে কিছু বলে না ….
সেই গান গুনগুন করতে করতেই হয়তো আপনি বাকিটা পথ পাড়ি দিয়ে চলে যাবে একেবারে ঝর্ণার পাদদেশে। আপনি যদি আর একটু উৎসুক হন তবে হয়তো রইরই করে নেমে যাবেন ঝর্ণার পানিতে। পেয়েও যাবেন ঝর্ণার শীতল পানিতে গা ভিজিয়ে হইহুল্লোড় করা পর্যটক সঙ্গী। আপনি যদি আর একটু সাহসী হন তবে করতে পারেন “ওয়াটার স্লাইডিং”। ঝর্ণার পাদদেশ থেকে সামান্য ঢালু হয়ে পানি বয়ে গেছে প্রায় ১০০ গজ। সেই জায়গা টুকুই পর্যটকদের স্লাইডিং সুবিধা দিয়ে থাকে। ওয়াটার স্লাইডিং নিশ্চিত ভাবেই আপনাকে নিয়ে যাবে আপনার কৈশোরে। তবে চূড়ান্ত রকম পিচ্ছিল হবার কারণে আপনাকে সাবধানে পা ফেলতে হবে। পাহাড়ি পাথুরে নালা হওয়ায় স্লাইন্ডিং করলে গায়ের কাপড় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছিঁড়ে যায়। তাই স্লাইডিং পরিকল্পনা থাকলে মোটা কাপড় পরে যাওয়াই উত্তম। সম্প্রতি পর্যটকদের সুবিধার্থে সেখানে একটি আরামঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে গোসল বা ঝর্ণার পানিতে বিনোদনের পর আপনি শুকনো কাপড় পরে নিতে পারবেন সহজেই।
0 Comments