শুক্লপক্ষ ডেস্কঃ
সাগর না পাহাড়? অবসর যাপনের পছন্দের কথা এভাবেই মানুষ জিজ্ঞেস করে বন্ধু-স্বজনদের। প্রশ্নের উত্তরে কম করে হলেও আধাআধি মানুষ বলবে সাগর। অবসর যাপনে সাগর যে বড় একটা অংশের পছন্দ এটা জানার জন্য গবেষণার দরকার হয় না। আবার কারও হয়তো সাগর পাহাড় দুটোই পছন্দ। সাগর আর পাহাড়ের মেল বন্ধন হলে তো পোয়া বারো। তেমনই মেলবন্ধন দেখা মিলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। শুধু দেশিয় পর্যটক নয়। কক্সবাজার এখন বিদেশি পর্যটকদেরও আকর্ষণ করছে। আবকাঠামো উন্নত করে বিনোদনের আরও নতুন নতুন অনুষঙ্গ এবং যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি করতে পারলে ভিনদেশি পর্যটকদের কক্সবাজার আরও প্রবল ভাবে আকর্ষণ করবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সম্প্রতি কক্সবাজারে যুক্ত হয়েছে প্যারাসেইলিং (প্যারাসেইল দিয়ে আকাশে উড্ডয়ন) সুবিধা। সমুদ্রের তটরেখায় প্যারাসেইল বাঁধা থাকা স্প্রিডবোর্ডে। আর প্যারা সেইলের সাথে বুক-পিঠ শক্ত করে বাঁধা থাকে প্যারাসেইল। যে গতিতে স্প্রিডবোর্ড সাগরে ধাবিত হয় সেই গতিতেই আকাশে প্যারাসেইলের সাথে উড়তে থাকে আরোহী। এর জন্য খরচ করতে হবে ২০০০-২৫০০ হাজার টাকা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০০-৫০০ ফুট উপড়ে উড়তে পারবেন ৫-১২ মিনিট। নিশ্চিত ভাবেই একতা দুঃসাহসিক যাত্রা হবে। তবে উচ্চতা ভীতি থাকলে প্যারাসেইলিং করবার আগে একটু ভেবে নেওয়াই ভালো।
প্যারাসেইলিং এ বিশেষ কোন ঝুঁকি না থাকলেও ছোটখাটো কিছু দুর্ঘটা প্রায়ই শুনা যায়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর তিন্নি আক্তার (২৬) নামে এক আরোহী প্যারাসেইলিং করতে গিয়ে ছিটকে পড়ে আহত হন। এই ঘটনার সপ্তাহ খানের পোড় ২২ সেপ্টেম্বর আরও এক নারীর আহত হবার খবর পাওয়া যায়। তাই সাবধান থাকতে হবে প্যারাসেইলিং করতে চাইলে। যেন আনন্দের মুহুর্ত বিষাদে ভরে না ওঠে।
দুর্ঘটা এডিয়ে আনন্দদায়ক প্যারাসেইলিং করতে মনে রাখতে পারেন কিছু সতর্কতামূলক বিষয়ঃ
১) প্যারাসেইলিং করার আগে দেখে নিতে হবে প্যারাসেইলিং এর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ঠিকঠাক আছে কি না। অপারেটর দক্ষ কি না? আরোহণের পূর্বে সতর্কতামূলক তথ্য দিচ্ছে কি না? যদি না দিয়ে থাকে তবে জিজ্ঞেস করে নেওয়া ভালো।
২) প্যারাসেইলিং এর আগে আপনাকে একটা বন্ড সই করতে হবে। সই করবার পূর্বে সব তথ্য জেনে নিন। বিশেষ ভীতি থাকলে বা সরঞ্জামাদিতে কোন রকম ত্রুটি মনে হলে সই না করাই ভালো।
৩) আবহাওয়া খারাপ থাকলে প্যারাসেইলিং না করাই ভালো। জোয়ার বা ভাটার সময় স্প্রিটবোর্ডের গতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ে। তাই জোয়ার-ভাটার সময় এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
৪) প্যারাসেইলিং এর পূর্বে প্যারাসুট ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি নিজে দেখে নিন। প্যারাসুট ভেজা থাকলে প্যারাসেইলিং এ যাবেন না। দড়ি ও লাইভ জ্যাকেট ঠকঠাক দেখে নিন। স্প্রিডবোর্ডে পর্যপ্ত তেল আছে কিনা দেখে নিন। তেল ফুরিয়ে গেলে আপনাকে সাগরে পড়ে যেতে হবে।
৫) আপনি যদি সাঁতার না জানেন সে বিষয়টা আগেই প্যারাসেইলিং কর্মীদের বলুন। সেক্ষেত্রে লাইফ জ্যাকেট ভালো ভাবে পড়েছেন কিনা দ্বিতীয় বার দেখে নিন। কোন কারণে সমুদ্রে পড়ে গেলে আতঙ্কিত না হয়ে সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করুন। প্যারাসেইলিং কর্মীরা আপনাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসবে।
একটু সাবধানতা অবলম্বন করলেই আপনি পাখির মতো উড়ে দেখতে পারবেন পাহাড় ও সাগরের মেল বন্ধন। অনুভব করতে পারবেন অনির্বচনীয় আনন্দ।
0 Comments